মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

আপনারা জানলে অবাক হবেন মোবাইল দিয়েও ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব। বর্তমানে পৃথিবী জুড়ে ৩৫%  মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করছে এবং এদের বেশিরভাগ মানুষ মোবাইল ব্যবহার করে থাকে। আমাদের মধ্যে 

[image]
অনেকেই প্রথম অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কম্পিউটার বা ল্যাপটপ কেনার সামর্থ্য থাকে না। তাই আমরা চাই মোবাইল দিয়ে শিখে ফ্রিল্যান্সি টাকা ইনকাম করতে। এই কনটেন্টে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখার গুরুত্ব সম্পর্কে জানানো হয়েছে। তাই এই কনটেন্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্র: মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা প্রথম ধাপ 

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পূর্বে যেসব সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। প্রথমে জানতে হবে ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কিভাবে করে। ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে স্বতন্ত্রভাবে কাজ এক কথায় কোন কোম্পানির আন্ডারে না থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের ইচ্ছায় যেকোনো সময় যে কোন কোম্পানির বা মানুষের সাথে কাজ করা। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনার সময় মতো এবং আপনার পছন্দমত কাজ আপনি করতে পারবেন।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখার পূর্বে আপনাকে জানতে হবে কোন স্কিলগুলো মোবাইলে শেখার সহজ।অনেক স্কিল আছে যেগুলা মোবাইল দিয়ে শিখা অনেক সহজ যেমন আর্টিকেল রাইটিং সোসিয়াল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট গ্রাফিক্স ডিজাইন ইত্যাদি।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখার ক্ষেত্রে এই বিষয়টাও গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি কাজ শেখার পর কোথায় কাজ করবেন অর্থাৎ কোন মার্কেটপ্লেসে কাজ করবেন যেমন upwork,Fiverr,people perhour etc.

যে সকল স্কিল মোবাইল দিয়ে শিখা সহজ

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে অনেক সহজ স্কিল আছে যেগুলো সহজ এবং অনেক সময় কম লাগে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে আর্টিকেল রাইটিং। যদি আপনার লিখার স্পিড অনেক ভালো থাকে অথবা মুখে ভয়েসের মাধ্যমে আপনি লিখতে পারেন  এবং তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারেন তাহলে আর্টিকেল রাইটিং করে আপনি খুব সহজে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন।

আরেকটি সহজ স্কিল হচ্ছে গ্রাফিক্স ডিজাইন আপনার কাছে যদি সুন্দর আইডিয়া থাকে তাহলে আপনি Canva এর মাধ্যমে খুব সহজে সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট ব্যানার ইত্যাদি করে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন। এ ধরনের কাজ আপনি খুব সহজে মোবাইল দিয়ে অনায়াসে করে ফেলতে পারবেন অল্প সময়ের মধ্যে।

আরো একটি জনপ্রিয় স্কিল হচ্ছে ভিডিও এডিটিং যেহেতু এখন বেশিরভাগ কনটেন্ট মানুষ ভিডিওর মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে তাই এই স্কেলটি অনেক ভাল স্কিল। মাত্র কয়েকটি অ্যাপস ব্যবহার করে আপনি খুব ভালোভাবে মোবাইলে ভিডিও এডিট করতে পারেন যেমন Adobe Premiere Rush,KineMaster বা InShot এগুলো খুব জনপ্রিয় ভিডিও এডিটিং মোবাইল অ্যাপ।

মোবাইল ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং কি সত্যিই লাভজনক হতে পারে?

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কি রকম লাভজনক হবে এটা নির্ভর করবে আপনার ওই নির্দিষ্ট স্কিল এবং সময়ের উপর। অনেক ভালো ভালো ফ্রিল্যান্সার আছে যারা মোবাইল ব্যবহার করে সহজ সহজ কাজ করে যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটি, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট এসব কাজ করে অনেক টাকা উপার্জন করতেছে।

তবে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে আপনাকে আপনার শেখা স্কিল এ এক্সপার্ট হতে হবে এবং প্রত্যেকটা মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে আপনার যথেষ্ট ভালো ধারণা থাকতে হবে এবং আপনার একটা ভালো প্রোফাইল থাকতে হবে মার্কেটপ্লেসে।

কমিউনিকেশন ভালো রাখতে হবে এবং আপনি যে কাজগুলো করবেন সেই কাজগুলো অনেক ভালোভাবে সম্পন্ন করতে হবে যাতে আপনার ক্লাইন্ট আপনার ভালো ফিডব্যাক দেয় এতে আপনার প্রোফাইল অনেক জনপ্রিয় হবে। তবে মোবাইলে কিছু সীমাবদ্ধতা আছে তবে আপনি যদি সঠিক নিয়মে কাজগুলো করতে পারেন তাহলে এই সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে আপনি অনেক ভালো মানের ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন।

মোবাইল দিয়ে কাজ করার জন্য কোন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মগুলো বেশি জনপ্রিয়?

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম বলা হচ্ছে Fiverr,Upwork,People per hour ইত্যাদি। এই প্ল্যাটফর্ম গুলা ফ্রিল্যান্সার দের জন্য খুবই জনপ্রিয় আপনি অনায়াসে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এই প্লাটফর্মগুলোতে করতে পারেন। আপনি এখানে আর্টিকেল রাইটিং ভিডিও এডিটিং এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন এর মত কাজগুলা খুব সহজে পেয়ে যাব।

শুধুমাত্র এখানে আপনার একটা প্রোফাইল তৈরি করতে হবে এবং ক্লায়েন্ট এর সাথে কমিউনিকেশন করতে হবে।Fiverr হচ্ছে গিগ ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম এখানে আপনার প্রোফাইলে আপনি যে সকল কাজে এক্সপার্ট সেই কাজগুলার সিম্পল কাজ দেওয়া থাকবে আপনার ক্লায়েন্ট এসে সেগুলা দেখবে যদি তার পছন্দ হয় তাহলে আপনাকে তার কাজের জন্য হায়ার করবে।

Upwork এই প্ল্যাটফর্মের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কাজ ক্লায়েন্টরা পোস্ট করে থাকেন আপনাকে সেখানে গিয়ে বিট করতে হবে তাহলে আপনি কাজ পেয়ে যাবেন। এইভাবে আপনি ক্লায়েন্টের কাজগুলো করতে পারবেন। এই প্লাটফর্ম গুলা মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী এখান থেকে সহজে কাজ নিয়ে কাজগুলো করতে পারবে

কি পরিমান সময় লাগবে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে?


মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে কত সময় লাগবে এটা নির্ভর করবে দুইটা জিনিসের উপর প্রথমটা হচ্ছে আপনার ওই নির্দিষ্ট স্কিল শিখতে কত সময় লাগছে এবং মার্কেটপ্লেসে কাজ পেতে কত সময় লাগবে। যেমন আপনি আর্টিকেল রাইটিং এর মত কাজ শিখতে সময় লাগবে এক সপ্তাহ। তবে এক্ষেত্রে আপনার লিখার স্পিড এবং গ্রামার ভালো হতে হবে।

তবে ভিডিও এডিটিং এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন এই কাজগুলো শিখতে কিছুটা সময় বেশি লাগবে কারণ এই স্কেল গুলো শুধুমাত্র টুলস এর ওপর নির্ভর করে না এটি বেশিরভাগ নির্ভর করে আপনি কি রকম আইডিয়া ধারণ করতে পারছেন। আর মার্কেটপ্লেসগুলোতে যদি আপনি একবার কাজ পেতে শুরু করেন তাহলে আপনি কাজ পেতেই থাকবেন।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকার প্রয়োজন?

[IMAGE]


মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে সেরকম কোনো খরচ নেই যেমন আর্টিকেল রাইটিং ভিডিও এডিটিং এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন এই অ্যাপগুলা ফ্রি এবং এসবের টিউটোরিয়াল ইউটিউবে ফ্রি দেওয়া আছে এগুলা দেখে আপনি অতি সহজেই এই স্কিনগুলো শিখতে পারেন।ফ্রী অ্যাপ গুলা হচ্ছে Canva,বা InShot.

তবে অনেক প্রিমিয়াম অ্যাপ গুলোও আছে যেগুলো আপনাকে মাসিক সাবক্রিপশন এর মাধ্যমে নিতে হয়। এবং আপনি চাইলে টাকা দিয়ে অনেক কোর্স আছে যেগুলোতে জয়েন করে ভিডিও এডিটিং গ্রাফিক্স ডিজাইন এই কাজগুলো শিখতে পারেন। পেইড অ্যাপ গুলো হচ্ছে Canva Pro,Adobe premier pro.

মোবাইল দিয়ে যে সকল ফ্রিল্যান্সিং কাজের চাহিদা অনেক বেশি?


মোবাইল দিয়ে সহজেই অনেক কাজগুলো করা যায় যেগুলা চাহিদাও অনেক বেশি। আর্টিকেল রাইটিং তার মধ্যে একটি জনপ্রিয় কাজ যেমন ব্লক পোস্ট সোসিয়াল মিডিয়া পোস্ট এই কাজগুলা অতি সহজে মোবাইল দিয়ে করা যায়।

ভিডিও এডিটিং এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন এর চাহিদাও দিন দিন বেড়ে চলেছে আমরা এখন বেশিরভাগ কনটেন্ট ভিডিওর মাধ্যমে দেখে থাকি এর জন্য সেই ভিডিওটাকে এডিট করতে হয় এর জন্য এডিটিং এর চাহিদা অনেক বেশি তাছাড়া গ্রাফিক্স ডিজাইন এর মাধ্যমে ব্যানার তৈরি করা পোস্টার তৈরি করা ভিডিও থাম্নেল তৈরি করা এগুলো খুবই জনপ্রিয়।

তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট এটারও জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। কোন একটা ক্লায়েন্ট আপনাকে তার সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট এর জন্য হায়ার করতে পারে বলতে পা। তার ফেসবুক পেজে বা টুইটারে বা ইনস্টা তে বিভিন্ন পোস্ট ভিডিও কাস্টমাইজ করা এবং তার বিভিন্ন পেজ ম্যানেজমেন্ট করা এই কাজগুলা দিয়ে থাকতে পারে এবং এই কাজগুলো সহজ এবং মোবাইলের মাধ্যমে অত অল্প সময়ে কাজগুলো করে দেওয়া সম্ভব।

মোবাইল দিয়ে ক্লায়েন্টের সাথে যেভাবে যোগাযোগ করা যেতে পারে



ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার তারা তাদের মোবাইলের জিমেল ব্যবহার করে ক্লায়েন্ট এর সাথে যোগাযোগ করার জন্য এর মাধ্যমে অতি দ্রুত মেসেজ বা কোন ডকুমেন্ট কে পাঠানো যায়।

এছাড়া অনেকে হোয়াটসঅ্যাপ জুম ব্যবহার করে থাকে ক্লায়েন্টের সাথে মেসেজ করার জন্য বা ভিডিও কলের মাধ্যমে ক্লায়েন্টের সাথে তার কাজ বুঝে নেওয়া এবং স্কিন শেয়ার করে ক্লাইন্টকে তার পূর্বের কিছু কাজের স্যাম্পল দেখায়।

এছাড়া মার্কেটপ্লেসের প্রোফাইল থেকেও ক্লায়েন্টদেরকে মেসেজ করা যায় যেমন আপ ওয়ার্ক এবং ফাইবার এ ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ করার জন্য মেসেজ অপশন রয়েছে আপনি সেখান থেকে ক্লাইন্টকে ডিরেক্ট মেসেজ দিতে পারেন।

লেখক এর শেষ কথা

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এখন সহজ থেকে সহজতর হয়ে গেছে। আপনি যদি সঠিক স্কিলটি ভালোভাবে শিখতে পারেন তাহলে এটা আপনার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে আপনি মোবাইলের মাধ্যমে ঘরে বসে বাহিরের ক্লায়েন্টের কাজ করে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আপনি যদি এই সেক্টরে লেগে থাকতে পারেন এবং ধৈর্য ধরে কাজগুলো করতে পারেন তাহলে আপনি একদিন না একদিন সফলতা অর্জন করবেনই এবং আপনি আপনার হাতের মোবাইল এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোনো জায়গার মানুষের সাথে এবং কোম্পানির সাথে কাজ করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং রিলেটেড অন্যান্য তথ্য পেতে আমাদের আর্টিকেল পড়ুন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url